সূর্য দেবতাকে খুশি করতে হাজার হাজার মানুষকে বলি - history bangla24

সূর্য দেবতাকে খুশি করতে হাজার হাজার মানুষকে বলি

Share This
কয়েক শতক আগে ম্যাসো-আমেরিকান অঞ্চল ম্যাক্সিকোতে অ্যাজটেক সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। এর আগে অ্যাজটেক সম্প্রদায়ের মানুষ যাযাবরের জীবন জাপন করত। জনশ্রুতি আছে, অ্যাজটেক সম্প্রদায়ের দেবতা তাদের আদেশ করেছিল যেখানে ক্যাকটাসের শাখায় ঈগলকে বসে সাপ খেতে দেখবে সেখানেই যেন স্থায়ী হয়ে যায়। তারা ঘুরতে ঘুরতে মধ্য-ম্যাক্সিকোর পাহাড়ঘেরা এই অঞ্চলে এমন দৃশ্যের দেখা পায় এবং সেখানেই তারা স্থায়ী হয়ে যায়। ধীরে ধীরে গড়ে উঠে একটি সভ্যতা, যা অ্যাজটেক সভ্যতা নামে পরিচিত।
অ্যাজটেক সংস্কৃতিতে মানুষের বিশ্বাস ছিল, বর্তমান আমরা যে সূর্য দেখি তার আগে আরও চারটি সূর্য ছিল। আগের চারটি চারটি সূর্যর সবকটিই বিশৃঙ্খলার কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে।  বিভিন্ন কারনে সূর্য দেবতা ক্ষিপ্ত হয়ে চলে গেছে সেই সাথে সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে।  এরপর আসে পঞ্চম সূর্য। অ্যাজটেকদের বিশ্বাস অনুসারে পঞ্চম সূর্যই এখন পর্যন্ত টিকে আছে এবং প্রতিদিন মর্ত্যবাসীকে ‘দিবস’ উপহার দিয়ে যাচ্ছে।  অ্যাজটেকরা বিশ্বাস ছিল সূর্যদেবতাকে শান্ত রাখতে হলে তার উদ্দেশ্যে নরবলি দিতে হবে। অন্যথা হলে পূর্ব দিক দিয়ে আর উঠবে না সূর্য। রাগান্বিত হয়ে আগের দেবতাদের মতো কোনো ক্ষতিকর ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবেন। ফলে ধ্বংস হয়ে যাবে মর্ত্যের সকল প্রাণ।
তাই বিশ্বাস অনুসারে দিনের পর দিন নরবলি দিত অ্যাজটেকদের। কখনো এর ব্যতিক্রম হয়নি। অ্যাজটেক সভ্যতার শেষের দিকে সূর্যের উদ্দেশ্যে নর-বলিদান চরম পর্যায়ে এসে উপনীত হয়। ধারণা করা হয় ১৪৮৭ সাল পর্যন্ত টেনোকটিটলান-এর বিখ্যাত পিরামিড মন্দিরে প্রায় ২০ হাজার থেকে ৮০ হাজার লোককে বলি দেয়া হয়েছিল।  বলি দেবার জন্য লোক সংগ্রহ করা হতো অপরাধী বা কয়েদীদের মাঝে থেকে। বিশেষত যুদ্ধ-বন্দীদেরই বলি দেয়া হতো বেশি। সাধারণত এই বলি উৎসব হতো উঁচু কোনো স্থানে। কারণ উঁচু হলে সূর্যের কিছুটা কাছাকাছি হওয়া যায়। উপযুক্ত উঁচু স্থানের জন্য তারা উঁচু উঁচু পিরামিড নির্মাণ করতো।
2-650x428
তাদের মানুষ বলি দেবার প্রক্রিয়া ছিল অত্যন্ত নারকীয় ও জঘন্য। একজন প্রশিক্ষিত পুরোহিত দক্ষ হাতে ছুরি দিয়ে বুক বিদীর্ণ করে হৃৎপিণ্ড বের করে নিয়ে আসতো। নড়াচড়া করছে বা স্পন্দন দিচ্ছে এমন জীবন্ত হৃৎপিণ্ডটি উঁচিয়ে সূর্যের দিকে তাক করে ধরতো। তাদের বিশ্বাস ছিল এরকম করলে সূর্যদেব খুশি হবে এবং পৃথিবীতে শান্তি অব্যাহত রাখবে। পিরামিডের উঁচুতে নিয়ে চার জন পুরোহিত বলিদানকারী লোকটিকে ধরে রাখতো। তারপর আরেকজন পুরোহিত  ছুরি চালিয়ে হৃৎপিণ্ড বের করার কাজটা দ্রুত সম্পন্ন করত। যাতে তাজা ও স্পন্দমান অবস্থায় সূর্যদেবের নিকট উপস্থাপন করা যায়। অন্যদিক দিয়ে হৃৎপিণ্ডহীন রক্তাভ মরদেহটি পাহাড় বা পিরামিডের চূড়া থেকে ফেলে দেয়া হতো। তলদেশে অপেক্ষমাণ হিসেবে থাকতো সাধারণ পূজারী লোকজন। তারা মৃতদেহকে টুকরো টুকরো করে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ে যেত। মাঝে মাঝে পূজার উদযাপন উপলক্ষে এমনকি এসব নরমাংস খাওয়াও হতো। বর্বরতার একদম চরম অবস্থা বলা যায়। দেবতাকে খুশি করার উদ্দেশ্যে নরবলির পাশাপাশি বিভিন্ন ধন-সম্পদ-সোনা-দানাও উৎসর্গ করা হতো।

পরবর্তীতে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে সভ্যতার বিকাশ ঘটে। সংস্কৃতিতেও আসে পরিবর্তন, ভ্রান্ত ধারনা থেকে বেরিয়ে আসে অ্যাজটেক সভ্যতার মানুষরা। জার ফলে বন্ধ হয় নরবলি।  তবে তাদের


16-300x278
পিরামিড
বানানোর কৌশল সবচাইতে প্রাচীন বলে মন্তব্য করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
সূত্রঃ ইন্টারনেট

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Pages