পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন হল মিশরীয় সভ্যতা। নীল নদের দেশ মিশর। আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে নীলনদের তীরে গড়ে উঠেছিল এই সভ্যতা এবং টিকে ছিল ৩২৩ খৃস্ট পূর্বাব্দে গ্রীক সম্রাট আলেক্সান্ডারের আক্রমনে পর্যুদস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত। এর রহস্য পন্ডিতদের গবেষনার বিষয়। মিশরের উপর গড়ে উঠেছে পূরাতত্বের নতুন শাখা নাম Egyptology. প্রাচীন যুগের সপ্ত আশ্চর্্যে র মধ্যে আজও টিকে থাকা একমাত্র বিস্ময় মিশরের পিরামিড। কোথা থেকে উৎপত্তি, কিভাবে গড়ে উঠলো বিশাল পিরামিড, মন্দির,ওবেলিস্ক, বা স্ফিংসের মূর্তি সে রহস্য আজও সম্পূর্ন উদ্ঘাটিত হয় নি। নিত্য নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে গবেষনার ফলে, পালটে দিচ্ছে আগের ধারনা গুলোকে।
খৃস্ট জন্মের ৩১০০ বছর আগে রাজা মেনেস নীল নদের উভয় পাশের উত্তর এনং দক্ষিনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বসতিগুলোকে একত্রীভূত করে গোড়াপত্তন করেন মিশরীয় সাম্রাজ্যের। মেনেস হন প্রথম ফারাও।মেনেস জন্ম গ্রহণ করেন খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০ সালে।তিনি নিম্ন (নীল নদের তীরবর্তি অঞ্চল) ও উচ্চ (নীল নদের তীর হতে দূরবর্তী অঞ্চল) মিশরকে একীভূত করে বৃহত্তর মিশর গড়ে তোলেন। এর পর বংশানুক্রমে ৩১টি রাজবংশ শাসন করেছেন নীল নদের দেশ মিশরকে। মোটামুটিভাবে এখানেই শুরু ধরা হলেও এর ও আগে এমনকি খৃস্টজন্মের ৭,০০০ বছর আগের মিশরীয় সাম্রাজ্যের শিলালিপি আবিস্কৃত হয়েছে।আমাদের যুগে প্রাচীন গ্রীক সভ্যতাকে যেভাবে জ্ঞান বিজ্ঞানের উৎস বিবেচনা করা হয়, ঠিক একইভাবে ঐ সময়ের গ্রীক মনীষিরা মিশরীয় সভ্যতাকে জ্ঞান বিজ্ঞানের সুতিকাগার বিবেচনা করতেন। হেরোডেটাস, প্লেটো, পীথাগোরাস সবাই মিশরীয় জ্ঞান বিজ্ঞানের খোজে উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়েছেন সেই সময়ের মিশরে।
নদী হল সভ্যতার প্রান কেন্দ্র। দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, চাষাবাস, প্রভৃতি কাজের জন্য প্রয়োজন ছিল পানি। প্রাকৃতিক জলাধার নদী ছিল পানির সহজলভ্য উৎস। তাই প্রাচীণ সভ্যতাগুলো ছিল নদীকেন্দ্রিক। উদাহরন স্বরুপ বলা যায় মেসোপটেমিয়া গড়ে উঠেছিল ইউফ্রেটিস, টাইগ্রিস নদীকে ঘিরে, ভারতবর্ষে সিন্ধু সভ্যতা গড়ে উঠেছিল সিন্ধু নদীর তীরে। আফ্রিকার কেন্দ্রস্থল থেকে উৎপন্ন হয়ে মিশরীয় মরুভূমির মধ্য দিয়ে নীল নদ গিয়ে মিশেছে ভূমধ্যসাগরে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নীল নদে বন্যা হত। নীলনদের এই মৌসুমী বন্যা বয়ে আনত উর্বর পলিমাটি ফলে চাষাবাস করা সম্ভব হত। পানির সহজলভ্যতা এবং খাদ্যের নিশ্চয়তার কারনেই আদিম মানুষ বসতি গড়েছিল নীল নদের তীরে। নদের দুই পাশে ২০ কিলোমিটার চওড়া এবং নদী বরাবর ৫০০ কিলোমিটার এলাকা ব্যাপী গড়ে উঠেছিল এই সাম্রা

No comments:
Post a Comment